০৫ অক্টোবর “বিশ^ শিক্ষক দিবস-২০২১” উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় “জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে” “বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস)” ও “এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের” যৌথ উদ্যোগে বিশাল মানববন্ধন ও এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন “বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) এর কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং “এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের” মুখপাত্র “জনাব মোঃ নজরুল ইসলাম রনি” এবং অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন- বাশিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মোহাম্মদ আতিকুর রহমান তালুকদান। উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাশিসের প্রধান উপদেষ্টা জনাব সাঈদুল হোসেন সাহেদ এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) এর উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফজর আলী। ২০২১ সালের বিশ্ব শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে Teachers at the Heart of the Education Recovery বা শিক্ষকই শিক্ষা- পুনরুদ্ধারের কেন্দ্রবিন্দুতে।
“বিশ^ শিক্ষক দিবসের” আলোচনা সভায় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ পৃথিবীর ১৫১টি দেশে “বিশ^ শিক্ষক দিবস” আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হলেও বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিবসটি উদযাপিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। ইউনেস্কোর মতে, “বিশ^ শিক্ষক দিবস” শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সম্মান জানাতে ১৯৯৪ সাল থেকে ৫ অক্টোবর “বিশ^ শিক্ষক দিবস” পালন শুরু করে ইউনেস্কো। বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে একবার “বিশ^ শিক্ষক দিবস” পালন করা হয়েছিল। এই দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করার দাবী জানান শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। জাতির পিতা “বঙ্গবন্ধুৃ শেখ মুজিবুর রহমানের” সুযোগ্য কন্যা “জননেত্রী শেখ হাসিনার” নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য আকাশ ছোঁয়া বলে জানান শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। “বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন, করতে হবে জাতীয়করণ” শ্লোগানে প্রকম্পিত ছিল জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রাঙ্গন।
শিক্ষকদের ন্যায্য দাবীসমূহঃ
০১। মুজিববর্ষেই শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ঘোষণা করতে হবে।
০২। ২৫% ঈদ বোনাস দীর্ঘ ১৭ বছরেও পরিবর্তন হয়নি। ২৫% এর পরিবর্তে শতভাগ ঈদবোনাস প্রদান করতে হবে।
০৩। ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দিয়ে করোনাকালীন এ দুঃসময়ে শিক্ষকদের জীবন আর
চলছে না।
০৪। অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের অবিলম্বে এমপিওভুক্তিসহ জাতীয়করণ এবং শিক্ষকদের বদলি প্রথা চালু করতে হবে।
০৫। প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরকে ৭ম গ্রেডের পরিবর্তে ৬ষ্ঠ গ্রেডে বেতন প্রদান করতে হবে।
০৬। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের চাকুরি অবিলম্বে জাতীয়করণ করতে হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আয় ফেরত নিয়ে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করা হলে সরকারের রাজস্বের তেমন কোন ঘাটতি হবে না বলে জানান শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নসহ বিশ^মানের শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে অবিলম্বে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ ঘোষণার জোর দাবী জানান শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন শিক্ষকরা। মানববন্ধনের শেষে শিক্ষকরা ব্যানার, ফেস্টুন হাতে এক র্যালি বের করেন এবং তা হাইকোর্ট মোড় ঘুরে পল্টন দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের গেটে এসে শেষ হয়।
শিক্ষক দিবসের সুবিশাল মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বাশিস) অতিরিক্ত মহাসচিব জনাব ওমর ফারুক, সিনিয়ন যুগ্ম-মহাসচিব মোঃ মুনসুর ইকবাল, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান ও মোস্তফা কামাল খান, যুগ্ম-মহাসচিব মোঃ নাসির উদ্দিন, সহকারী মহাসচিব ঝর্না বিশ^াস এবং মোঃ মিজানুর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল কালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক মোঃ আব্দুল আলীম, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি নূর মোহাম্মদ হানিফ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ লুৎফর রহমান, অর্থ-সম্পাদক মোঃ সামসুল হক তরফদার, গাজীপুর জেলার সভাপতি মোঃ নূরুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা রেহেনা আক্তার, কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, কুমিল্লা জেলার সভাপতি প্রশান্ত কুমার সরকার এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ খলিলুর রহমান, নারায়নগঞ্জ জেলা বাশিসের সভাপতি মোঃ তোফায়েল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছোবহান সরকারসহ প্রমুখ।