1. [email protected] : editor :
  2. [email protected] : facfltd :
  3. [email protected] : FagTrEwL :
  4. [email protected] : newseditor :
আজও সেই কালো রাতের কথা মনে উঠলে আতকে উঠি - news ATV
শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ১০:২০ অপরাহ্ন

আজও সেই কালো রাতের কথা মনে উঠলে আতকে উঠি

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট সময় : শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২২
  • ৩৬৯ Time View
৪ নভেম্বর আমার পিতা তাঁতী দল বাগেরহাট জেলার সহ-সভাপতি, রামপাল উপজেলার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, পরবর্তীতে সভাপতি, পরবর্তীতে কৃষক দলের রামপালের সভাপতি ও বাগেরহাট জেলার সহ-সভাপতি. শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক শেখ আতিয়ার রহমান খুব সকালে ঘর থেকে বের হয়েছিল। রাতে এসে আমাদের পরিবারের সাথে আমার জন্মদিন উপলক্ষে কেক এনে আনন্দ উপভোগ করবে। সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনতে শুরু করেছিলাম। একটু সকাল হলে যখন বাবার ফোনে কল করি তখন মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় দুঃশ্চিন্তা শুরু হয়। সময় যেতে যেতে দুঃশ্চিন্তা বাড়তেই থাকে। ৫ তারিখ ছিল আমার জন্মদিন, সেদিন জন্মদিনের কোন আনন্দ চোখেমুখে ছিল না, ছিল শুধু বাবা ফিরে আসার অপেক্ষা আর অপেক্ষা। যখন অস্থির হয়ে অপেক্ষা করছিলাম ঠিক তখনই আমার জীবনে ৫ ও ৬ নভেম্বর ২০১২ একটি বিভীষিকাময় তারিখ চোখের সামনে সেদিন মায়ের যে পরিস্থিতি ছিল সেটা বর্ণনা দেওয়ার মতো নয়, আমার মা এর বয়স তখন ৪২/৪৩ বছর, আমার মায়ের বাবা নাই (আমার নানা)সম্পত্তিগত কারণে আমার মামাদের সাথে ভালো সম্পর্ক নেই, নেই নেই খুব বেশি যাওয়া আসা, বাবার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর মাকে নিয়ে ছিল আমার সবচেয়ে বেশি চিন্তা, মায়ের বিশ্বাস ছিলো  আমার প্রতি আকাশ সমান -যে আমি তাকে মিথ্যা সান্তনা বা মিথ্যা কোন কথা বলবো না।মা ফোন দিয়ে আমার কাছে জানতে চেয়েছিল যে তোর আব্বুর কি হয়েছে? তখন আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম হসপিটালের মর্গের সামনে,কাটাছেঁড়া করছিল আমার বাবার শরীরটাকে, ঠিক তখনই একবুক কষ্ট বুকে চেপে মাকে বলেছিলাম, আব্বু একটু অসুস্থ হাসপাতালের আইসিইউতে আছে আপনি চিন্তা কইরেন না, আমি আব্বুকে নিয়ে বাড়ি ফিরবো। পুলিশের কার্যক্রম আব্বুর শরীরের পোস্টমর্টেম সবকিছু শেষ করে রওনা হলাম বাড়ির দিকে। জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ জার্নি ছিল সেদিন, অবশেষে ৬ নভেম্বর ২০১২ মঙ্গলবার রাত ১১:০০ পৌছালাম বাড়ির সামনে, শত শত শুভাকাঙ্খী আত্মীয়-স্বজন, আপনজন-প্রিয়জন সবাই অপেক্ষা করতেছে। অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমেই সোজা ঢুকে গেলাম ঘরে, কারো ডাক, কারো কথা, কারো কান্নার চিৎকার কেন জানি আমার কানেই ঢুকলো না,নাই আমার চোখেও পানি, শুধু একটাই কথা আমার মা কই?
মায়ের সেই অসহায় চেহারা,সেই আর্তনাদ,স্বামী হারানোর আত্মচিৎকার আমাকে থমকে দিয়েছিলো, মা এর একটা প্রশ্ন ছিলো তোমার আব্বুকে কি সাথে নিয়ে এসেছো? এক মুহুর্তের জন্য মনে হয়েছিল-ওই খুনিরা বাবাকে রেখে আমাকে কেনো মেরে ফেললো না, কিছু বলার ছিলো না, শুধু বলেছিলাম মা আমি তো আছি,হইতো বাবার অভাব পুরন করতে পারব না তবে আমি বেঁচে থাকা অবস্থায় কোন দিন আপনাকে কোন অভাব বুঝতে দিবো না, রাত যেয়ে দিন হলো, বাড়ি থেকে আব্বুর চির বিদায়ও হলো, চিরদিনের জন্য শায়িত হলেন আব্বুর বাবার পাশে। আত্মীয়-স্বজনের বদলে যাওয়া রুপ ও বের হলো, ৩দিন পর আমদের দুই বোন কে যখন, মা কে নিয়ে চাচাদের বিরুপ মন্তব্য এর শিকার হতে হই, তখন থেকে বদলে ফেলি নিজেদের সেই অবলা অসহায় হওয়া চেহারা কে চোখের পানি মুছে বাবার দায়িত্ব কে নিজের মনে করে সবার মুখের উপর প্রতিবাদ করে মায়ের পাশে ছিলাম, বলেছিলাম আমরা শুধু বাবার মেয়ে নই, তার আদর্শের সন্তান, মেয়ে বলে অবলা মনে করতে এসোনা।
আমার মায়ের চিন্তা আমাদের আজকের পর যতদিন মা বেঁচে থাকবে কেউ তার দিকে চোখ তুলেও তাকাবেনা, দেখতে দেখতে এই ১০ বছর চলে গেছে, সে (আমার মা) তার স্বামীর বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও যাবেনা, মা বাড়িতে ১০ টা বছর একা থাকছে, চারদিকে শুধু শূন্যতা, একাকিত্ব জীবন। মা কয়েকদিন ধরে খুব অসুস্থ,  ২বার হার্ট অ্যাটাক করেছে ,ব্লাড সুগার ১৮-২৪ থাকে সব সময়, হাই প্রেসার ,এজমা এলার্জি, আমাদের দুই বোনের একমাত্র মা ছাড়া আর কোন আপনজন নাই। আগামী ৫ই নভেম্বর বাবার ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী। বাবাকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে গাজীপুর জয়দেবপুর থানায় মামলা করেছিলাম। একজন গ্রেফতারও হয়েছিল, পরে সে জামিনে মুক্তি পেয়েছিল। বাকি ৬জন জামিনে মুক্ত রয়েছে। নেপথ্যে কুশলবদের খবর আজও জানতে পারিনি। তবে আমরা হাল ছাড়িনি, শত কষ্টের মধ্যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আমৃত্যু লড়াই চলবে, আশাকরি দেশপ্রেমিক নাগরিক ও মানবাধিকার সংগঠন, বিশেষ করে ‘মায়ের ডাক’ আমার পাশে থাকবে। আমাদের মা এর জন্য সবাই দোয়া করবেন, তিনি যেন সুস্থ হয়ে উঠেন।
লেখক
শহীদ আতিয়ার রহমানের ছোট মেয়ে
শারমিন সুলতানা রুমা
সভাপতি, শহীদ শেখ আতিয়ার রহমান স্মৃতি সংসদ

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 LiveTV
Theme Customized By LiveTV