ঢাকা মহানগরে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনে চলাচল বন্ধের
ঘোষণায় ক্ষোভ; সড়ক পরিবহন মন্ত্রনালয় ও দুই সিটি কর্পোরেশন মেয়রের ঘোষণা
প্রত্যাহারের আহ্বান
রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ
ঢাকা মহানগরে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলে বন্ধে সড়ক
পরিবহন মন্ত্রনালয় ও দুই সিটি কর্পোরেশন মেয়রের ঘোষণার তীব্র নিন্দা,
ক্ষোভ ও তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও
ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ এর কেন্দ্রীয় পরিচালবা পরিষদ এর আহ্বায়ক
খালেকুজ্জামান লিপন।
বিবৃতিতে সংগ্রাম পরিষদ এর পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়,
আকস্মিক এই ঘোষণা উদ্দেশ্যমূলক। মন্ত্রী ও মেয়রের জানা আছে যে, ইজিবাইক,
রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহন ঢাকা মহানগরের প্রধান সড়কে চলাচল করে না।
এটা মূলত মহানগরে অলি গলিতে চলে কারন সেখানে কোন গণপরিবহন নেই। এক জরিপে
দেখা গেছে ঢাকা মহানগরের প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ এই ধরনের যানবাহনে চলাচল
করে। আর মাত্র ৬ ভাগ যাত্রী নিয়ে ঢাকা মহানগরের প্রায় ৮০ ভাগ রাস্তা দখল
করে যানজট সৃষ্টি করে প্রাইভেট গাড়ি। তারপরেও কেন এই বাহনের উপর এত
আক্রোশ। দ্বিতীয়ত: এই বাহনের সাথে চালক, মালিক, মহাজন, গ্যারেজ মালিক,
চার্জিং ব্যাবসায়ি, শ্রমিক মেস পরিচালনাকারি ও মটর/রিকশা
পার্টস,ব্যাটারিসহ ৬০/৬৫ ধরনের ব্যাবসা ধরলে এর সাথে যুক্ত সারাদেশে
প্রায় ৬০ লাখ মানুষের জীবিকা এর উপরে নির্ভরশীল। ঢাকা মহানগরেও এ সংখ্যা
আনুমানিক ৫ লাখের উপরে। দেশের ও ঢাকা মহানগরের অর্থনীতি ও জিডিপিতে
গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখছে।এ গণপরিবহন বন্ধ হলে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে
জীবিকা নির্বাহকারি এ লাখ লাখ মানুষের ও তাদের পরিবারের দায়-দায়িত্ব কে
নেবে? তৃতীয়ত: এটি পরিবেশ বান্ধব, শব্দ ও বায়ু দুষণ করে না, নিরাপদ ও
সাশ্রয়ী বাহন বলে এটা এখন বাংলাদেশের সাধারন মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয়
বাহন। ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে বিদ্যুৎ প্রতি মন্ত্রী এ বাহনের ইঞ্জিনের
সক্ষমতা, সাশ্রয়ী, বিদ্যুতে রিটার্ন বেশি ও পরিবেশ বান্ধব বলে এ গাড়ি
চলাচলকে সরকারের পক্ষ থেকে উৎসাহী করা ও লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত
সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।
তিনি এই বাহনকে বাংলার টেসলা বলে সম্বোধন করছেন।মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট
মহাসড়ক ছাড়া সর্বত্র চলাচলে আদেশ প্রদান করেছে। এই পরিস্থিতিতে পরিবহন
মন্ত্রণালয় ও দুই মেয়রের এই ঘোষনা কাউকে খুশি করতে বা কোন মহলকে আশ্বস্ত
করতে করা হচ্ছে কিনা তাও অনুসন্ধান জরুরি বলে সংগ্রাম পরিষদ মনে করে।
সংগ্রাম পরিষদ সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় ও ঢাকা মহানগরের দুই মেয়রের এই
অযৌক্তিক, গণবিরোধী, পরিবেশে বিরোধী ও লাখ লাখ মানুষকে কর্মহীন করে
বেকারের মিছিল দীর্ঘ করার অগণতান্ত্রিক ও তুঘলকি সিদ্ধান্ত বাতিল ও
প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। অন্যথায় এই লাখ লাখ কর্মহীন ও বেকার চালকসহ
সংশ্লিষ্টদের নিয়ে রাজপথে তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুশিয়ার
উচ্চারণ করেন।
একইসাথে সংগ্রাম পরিষদ থ্রী-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযান নীতিমালা চুড়ান্ত ও
কার্যকর করে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের দ্রুত নিবন্ধন,
লাইসেন্স ও রুট পারমিটসহ সংগ্রাম পরিষদ ঘোষিত ৭ দফা দাবি মেনে নেওয়ার
জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।