আজ ১৯ জুলাই শনিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে “গণ- অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় গত বছর এই দিনে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড, গুলিবর্ষণ ও হামলার ঘটনা ঘটে তার বিচার ও হামলাকারীদের শাস্তি দাবী করা হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন যে আশা, আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গত বছর জুলাই আগষ্টে ছাত্র শ্রমিক জনতা রক্ত দিয়ে গণ- অভ্যুত্থান করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা কে উৎখাত করলো একবছর পার হয়ে গেলেও জন আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার এখনো পর্যন্ত গ্রহণ করেনি।
যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা হাসিনা ও তার সরকারকে ফ্যাসিবাদী হতে সহায়তা করেছে, সংবিধান এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে, সরকারের আনুগত্যে পরিচালনা করা হয়েছে রাষ্ট্রের সেসব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এবং সংবিধানকে যদি স্বাধীন এবং গণতান্ত্রিক করা না যায় তাহলে ভবিষ্যতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন তাতে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার তেমন পরিবর্তন হবে না। জনগণ গত ১৬ বছর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। পতিত ফ্যাসিস্ট নির্বাচন ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ভেঙ্গে দিয়েছে। পুরো নির্বাচনকে কালো টাকার খেলা, মাফিয়া ও পেশী শক্তির উপর নির্ভরতায় পর্যবসিত করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে গণ হত্যার বিচার কার্য শুরু করবে এবং তারপর একটি অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে এমনটাই এই সরকারের কাজ বলে জনগণ মনে করেন। রাজনৈতিক দল গুলোও এই ব্যপারে যথেষ্ঠ উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছেন। কিন্তু জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কিংবা বর্তমান সরকার কেন এত সময় নিচ্ছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।
সভায় প্রধান অতিথি বিএনপির মহাসচিব জননেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি খুবই আশাবাদী, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ডঃ মুহাম্মদ ইউনুছ দেশে বিদেশে খুবই সন্মানীত ব্যক্তি, অভিজ্ঞ এবং বিচক্ষণ । তিনি নিশ্চয় রাজনৈতিক দল গুলোর সাথে আলোচনা করে দ্রুত জুলাই সনদ তৈরীর কাজ সম্পন্ন করবেন এবং জাতীয় নির্বাচনের পথ নকশা ঘোষণা করবেন।
তিনি ডঃ মুহাম্মদ ইউনুছ কে উদ্যোশ্য করে বলেন আপনি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথেয় বসুন, আলোচনা করুন, সবার মতামত নিন, তারপর একটা সঠিক সমাধানের পথ বের করুন।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি একটা উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, আমরা বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে চাই।
সভায় গণতন্ত্র মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক ভাসানি জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে মহাসচিব ডঃ আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির ( কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান ভুঁইয়া মঞ্জু, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন,গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মিজানুর রহমান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ ( মার্ক্সবাদী) এর কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য সীমা দত্ত প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভায় শুরুতে গণ- অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদসহ সকল শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে সন্মান জানানো হয় এবং আহত যোদ্ধাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সেলিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসনাত রুবেল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।বার্তা