মঞ্জুর: অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি এর বিভিন্ন এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্টের মালিক ও কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ গভীর ক্ষোভও দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, গত ২০ জুন ২০২৫ ইং তারিখে দুয়ার সার্ভিসেস পিএলসি (সার্ভিস প্রোভাইডার) এর সাথে চুক্তি বাতিল করে অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি এজেন্ট ব্যাকিং সেবা কোনরূপ পূর্ব ঘোষনা ছাড়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়। এ হঠকারী অন্যায্য ও একতরফা সিদ্ধান্তের কারণে ১০.৫ লক্ষ গ্রাহকের ব্যাংকিং কার্যক্রম সহ ৫ লক্ষ গ্রাহকের অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম ও ৩,০০০ হাজারের অধিক এজেন্ট, কর্মকর্তা, কর্মচারীর জীবন ও জীবিকা মারাত্মক সংকটে পড়েছে। একই সঙ্গে হাজার হাজার গ্রাহক বিভিন্ন ভাতা ভোগী, রেমিট্যান্স, ব্যবসায়িক লেনদেন ও জরুরী ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে। এই অচল অবস্থার ফলে দেশের অর্থনীতি তথা গ্রামীণ অর্থনীতি এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি মূলক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, যা অবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী রাখে। ব্যাংক একটি আর্থিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, বিশ্বের কোন দেশে এ ধরনের আর্থিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার নজির নাই। অথচ অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি কর্তৃপক্ষ সে নজির সৃষ্টি করেছে, যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি দুয়ার নামক (সার্ভিস প্রোভাইডার) প্রতিষ্ঠান (৩য় পক্ষ) কে নিয়োগ দিয়েছে। এখানে দুয়ারের (সার্ভিস প্রোভাইডার) সাথে চুক্তি, মামলা মোকাদ্দমার দায় ভার সম্পূর্ণরূপে অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি উপর বর্তায়, এর কোন দায় এজেন্টের উপর বর্তায়না। কারণ দুয়ারকে (সার্ভিস প্রোভাইডার) নিয়োগ দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। বর্তমানে ৫৬৭ এজেন্ট পয়েন্ট বিগত ৫২ দিন ধরে সম্পূর্ণ অচল অবস্থায় রয়েছে। পাঁচশত সাতষট্টি (৫৬৭) এর অধিক উদ্যোগতার জীবন আজ দুর্বিষহ। এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা জনগণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য অত্যন্ত সমাদৃত। অথচ অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি কর্তৃপক্ষ কোন লিখিত নির্দেশনা সময়সীমা বা বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া এই এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দেয়। বিভিন্ন সময় মৌখিকভাবে চালুর আশ্বাস দেওয়া হলেও এখানো পর্যন্ত কোনো লিখিত প্রতিশ্রুতি বা সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। তারা স্পষ্টভাবে বলতে চান, যেই অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অন্যায় সিদ্ধান্তের ফলে এই এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করা হয়েছে, তা ব্যাংকিংখাতে স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে এবং অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি এর উপর মারাত্মক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তারা দেখতে পাচ্ছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ভিতরে এমন কিছু বেদনাদায়ক ও অমানবিক সিদ্ধান্তগ্রহণকারী রয়েছেন, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাংকের জন্য লাভজনক এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা অচল রেখে দেশ সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাইছেন এ ধরনের পদক্ষেপকে তারা চরম অবিচার ও দায়িত্বহীনতা হিসেবে দেখছি। এখানে উল্লেখ্য যে, বর্তমান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর মহোদয় ও সরকারের অর্থ উপদেষ্টা মহোদয় এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুফল নিয়ে দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন গবেষণা ও সভা সমাবেশে ইহার সফলতার কথা উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের প্রত্যেক ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা জনগণনের দৌড় গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য উনাদের আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত আছে। একটি অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অন্যায় সিদ্ধান্তের ফলে যেন সারা দেশে বিস্তৃত শত শত কর্মরত এজেন্ট কর্মকর্তা, কর্মচারী তথা হাজারো পরিবারের জীবন জীবিকা ও লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের সেবা ব্যাহত না হয় এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যকর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে সেবা বন্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এজেন্ট মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আর্থিক ক্ষতির দায়ভার গ্রহণ করে এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তাদের দাবী :- ১। অবিলম্বে (আগামী ২৪ ঘণ্টার) মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি এর এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে হবে। ২। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের সম্পূর্ণ বকেয়া পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে। তাদের অবস্থান :- আমরা দীর্ঘদিন ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করে, অফিসের সম্পূর্ণ খরচ বহন করে, গ্রাহকদের সেবা ও ব্যাংকিং পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি-দাওয়া না মানলে চলমান শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তারা আশা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের সকল এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্টগুলি চালু করে দেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ জানান।