মিরপুর ইস্টার্ন হাউজিং ২য় পর্ব এলাকায় মৃত্যু নারীকে
জীবিত দেখিয়ে দলিল সম্পদনা, সিআইডির প্রতিবেদন
ও ভুক্তভোগীদের প্রতিকার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
মোঃ মামুন : জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: গতকাল ৪ মার্চ ২০২৫ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে মোহাম্মাদ বাইজিদ হোসাইন (পিতা- সিরাজুল ইসলাম,বাড়ি ১৭১, আলুব্দী, মিরপুর ১২, ঢাকা-১২১৬) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার ব্যবসায়ী অংশিদাররা মিরপুর ইস্টার্ন হাইজিং ২য় পর্ব এলাকার ব্লক: এন, রোড: ৩, প্লট নং ৯১ ক্রয় করে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ভোগদখল করে আসছি। গত ১৯/২/২০২৫ তারিখে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন পিতা-জামাল হোসেন ও সাইফুল ইসলাম নিজাম সন্ত্রাস বাহিনী নিয়ে আমাদের জমিটি দখলের পায়তারা করেন। ঘটনা জানতে পেরে আমি ৯৯৯ লাইনে ফোন দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্রয় নেই। এতে পল্লবী থানার পুলিশ সদস্য মো. আবু সামাদ ও সেনাবাহীনির টহল টিম ক্যাপ্টিন শাহাদাৎ ও কর্নেল জাকারিয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছান। কর্নেল জাকারিয়া উভয়ের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্ত্যব বলেন যে, যেহেতু এই জমিতে মামলা চলমান রয়েছে। তাই আদেশ না আসা পর্যন্ত এখানে কেউ ঝুট-ঝামেলা সৃষ্টি করবেন না বলে তিনি চলে যান। এশিয়ান টিভিতে সরেজমিনে ঘটনা বর্ণনা করে একটি নিউজও প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ২/৩/২০২৫ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে কতকগুলো মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করেন। সেই সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন যে, আমি নাকি রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং তিনি নাকি আমাদের উল্লেখিত জমিটিতে দখলে ছিলেন। মো. জাহাঙ্গীর হোসেন কখনোই আমাদের জমিটিতে দখলে ছিলেন না। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের পল্লবীর ২য় পর্বের লে-আউটভুক্ত জমিটি আমার ইস্টার্ন হাউজিংয়ের কাছ থেকেই কিনেছি এবং জমিটি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের দখলেই ছিল। যা ক্রয়সূত্রে এখন আমাদর দখলে রয়েছে। মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমি আরও বলতে চাই, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই। আমি ছোটখাটো ব্যবসায়ী, ব্যবসার প্রয়োজনেই সকলের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রেখেই ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়। তেমনি ভাবে জাহাঙ্গির হোসেন ও পাশেই ৭.৫০ কাঠা উপরে দশ তলা একটি বিল্ডিং করে,৪ কাঠার টিন সেড একটি মার্কেট করেন মিরপুর সি ব্লক ৪/৫ নাম্বার বাসার ২টি ফ্লাট ক্রয় করেন এ ব্লক একটি বাড়ি দখল করে আছেন। সংবাদ সম্মেলনে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন যে নামজারি থাকার দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে মিরপুর ভূমি অফিসে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের অভিযোগের পরিপেক্ষিতে সৃষ্ট একটি মিস-কেসের শুনানি অব্যাহত রয়েছে। অচিরেই এর রায় পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। মো. জাহাঙ্গীর হোসেন নূরজাহান বেগম নামের এক নারীর কাছ থেকে ২০১৮ সালে জমি ক্রয়ের দাবি করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, জমির খতিয়ানে যে নূরজাহান বেগমের নাম আছে তিনি ২০০৫ সালে মৃত্যবরণ করেছেন এবং তিনি যতটুকু জমি পেতেন,দলিল নং ৫৪৬১ তা ১৯৯৮ সালে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের নিকট বিক্রি করে দিয়েছেন। পরবর্তীতে নূরজাহান বেগমের ভুলক্রমে যে সিটি খতিয়ানে রেকর্ড বেশী হয়েছে, তা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ক্রয়কৃত জমি। আর এজন্যই ইস্টার্ন হাউজিংয়ের পক্ষ থেকে প্রতিকার চেয়ে মিরপুর ভূমি অফিসে দ্বারস্থ হয়েছে। উল্লেখ্য, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন যে নূরজাহান বেগমের কাছ থেকে জমি কিনেছেন বলে দাবি করেছেন, তার এনআইডির তথ্যের সঙ্গে প্রকৃত নূরজাহান বেগমের কোনো মিল নেই। সিআইডির রিপোর্টেও তা প্রমাণ হয়েছে৷ আমি জানতে পেরেছি, নামজারি বহাল পেতে মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে মিরপুর ভূমি অফিসের কানোনগো আব্দুল বাতেন সাহেবকে নাকি ৩০ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। আমি আব্দুল বাতেন সাহেবকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আল্লাহ তো আপনাকে চোখ দিয়েছেন, এনআইডির নম্বরের সঙ্গে খতিয়ান মিল আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেন, এটা দেখবে কোর্ট,আমি বলি :আপনিও তো কোর্টের প্রতিনিধি একটি কোট তিনি আমতা আমতা করেন। আবারও জিজ্ঞাসা করি, সরজমিনে আমার দখল আছে কিনা, আপনার চোখ দিয়ে কি দেখলেন উত্তরে তিনি চুপ থাকেন। মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে আমার ব্যাক্তিগত কোনো শত্রুতা নেই, কারণ আমি জমি ক্রয় করেছি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের নিকট থেকে। তার (জাহাঙ্গীর হোসেন) চাওয়া পাওয়া থাকলে ইস্টার্ন হাউজিংয়ে সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। জাহাঙ্গীর হোসেনের জমির কগজপত্র সঠিক হলে আমি নিজে তার জন্য ইস্টার্ন হাউজিং কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করব বলেও প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আমার জানামতে, ইস্টার্ন হাউজিং একটি সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান। তারা মানুষের কল্যানে কাজ করে আসছে। ইস্টার্ন হাউজিং ১৯০/২০২৪ রিভিউ মামলা ও দলিল বাতিলের মামলা দায়ের করেছে। প্রয়োজনে কোম্পানি আমার প্লট চেঞ্জ করে দেবে, এতে আমার সমস্যা নেই। আমি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়েছি বিদায়, আমার সঙ্গে শত্রুতা শুরু করেছেন। তিনি এখন বলছেন, তার ভোটার আইডি ডিজিট ভুল হয়েছে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কয়টি ডিজিট ভুল হয়েছে, সংশোধ করেন। জবাবে, তিনি (মো. জাহাঙ্গীর হোসেন) বলেন, দাতা মারা গেছেন। আমি : দাতা সব ওয়ারিশান নিয়ে এক সাথে তো মারা যায়অনি দলিল সংশোধন করে সঠিক টা দাবি করেন।আমি তার (জাহাঙ্গীর হোসেন) জন্য দোআ করি, আল্লাহ যেন তাকে হেদায়েত দান করেন। মামলার বিস্তারিত ও সরবারহ করা তথ্য : ১) জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাইফুল ইসলাম নিজাম, বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-২০, সি এম এম, আদালত ঢাকা। সিআর মামলা (পল্লবী) নং ৬৯৪/২০২৪, ধারাঃ ভূমি অপারাধ। আদালত তদন্তের জন্য আদেশ দিলে সিআইডি তদন্তপূর্বক রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেছে। সেই কপি আপনাদের সরবরাহ করা বক্তবের সঙ্গে সংযুক্ত আছে। ২) দলিল নং ৪৪৩৫ তাং ২৫-৭-২০১৮। যা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ময়মনসিংহ দরগা পাড়া, নূরজাহানকে দিয়ে সম্পাদন করেন। তাহার জাতীয় পরিচয় পত্র নং ১৯872696402৫৪৫২২৫। দেখা যায় যে, নূরজাহান বেগমের পিতা- আব্দুল মজিদ, মাতা: ফিরুজা বেগম, স্বামী মো. আইনুদ্দিন, সিটি খতিয়ান নং ১৪৮৯ তে উল্লেখিত নূরজাহান বেগম দলিলে বর্ণিত নূরজাহান বেগম একই ব্যক্তি নয়। ৪৪৩৫ নং দলিলের সনাক্তকারী মুচলেখা দিয়েছেন যে, তিনি নূরজাহানকে দেখেন নাই এবং চেনেনও না। দলিল করার দিন তিনি উপস্তিত ছিলেন না। ৩) সিআইডির রিপোর্ট: যেখানে উল্লেখ রয়েছে যে নূরজাহান বেগম ২০০৫ সালে ইন্তেকাল করেছেন। মৃত ব্যক্তি কি করে ২০১৮ সালে দলিল করেন।